আসামিরা হলেনঃ উপজেলার চরফরাদী ইউনিয়নের গান্দারচর এলাকার বাবুল মিয়া (৪৫) ও তার ছেলে নাঈম (২৫) এবং একই এলাকার মোঃ ইয়াসিন মিয়া (২৫)।
মো. নাহিদ পাকুন্দিয়া পৌরসভার পাইকলক্ষীয়া গ্রামের বাসিন্দা মৃত আবদুল কুদ্দুসের ছেলে। মৃত নাহিদ পেশায় ছিলেন রাজমিস্ত্রী।
মৃতের বড় ভাই নাঈম জানান, তার ভাই নাহিদ ঠিকাদার বাবুলের সাথে রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন। চলতি মাসের সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে মির্জাপুর এলাকা থেকে ছাদ ঢালাইয়ের কাজে ব্যবহৃত কিছু মালামাল চুরি হয়ে যায়। ওই রাতেই বাবুলের আরও দুই কর্মচারী রাজু ও হাসান পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় বাবুলসহ অন্যান্য আসামিরা বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে পাকুন্দিয়া বাজারে তার নিজস্ব গ্যারেজে ডেকে নেন নাহিদ ও আজিমকে। সেখানে তাদেরকে আটকে রেখে বেধড়ক মারধর করে। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে তিনি সেখানে গিয়ে দেখেন তার ভাইয়ের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারধরের চিহ্ন। এসময় ঠিকাদার বাবুল আর পাকুন্দিয়া বাজারের গরুরহাটা এলাকার মেহেদী তাকে জানান, তার ভাইকে এখান থেকে নিতে হলে স্ট্যাম্পে সাক্ষর করে নিতে হবে। সেখানে শর্ত জুড়ে দেওয়া হয় পাঁচদিনের মধ্যে তিন লাখ টাকা পরিশোধ করতে হবে। ভাইয়ের অবস্থা দেখে এ শর্তেই রাজি হন তিনি। পরে এখান থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে ভাইকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন তিনি৷ পরে অপমান সহ্য করতে না পেরে বাড়িতে গিয়ে কীটনাশক জাতীয় বিষ খেয়ে বাড়ির উঠানে কাতরাতে থাকে নাহিদ। এ অবস্থা দেখে তার স্ত্রী কোহিনূর মোবাইলে বিষয়টি তাকে জানালে তিনি বাড়িতে গিয়ে তাকে প্রথমে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান৷ সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাত ৯ টার দিকে নাহিদকে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। সেখান তার অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শুক্রবার ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে পাঠালে পথেই মৃত্যু হয় নাহিদের।
পাকুন্দিয়া পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাহমুদুল হাসান রাসেল জানান, চুরির অপবাদ দিয়ে নাহিদ ও আজিম নামে দুটি ছেলেকে আটকে রেখে মারধর করেছে বাবুল। আবার পাঁচদিনের মধ্যে তিন লাখ পরিশোধের শর্তে কয়েকজন মিলে ফাঁকা স্ট্যাম্পে সাক্ষর রেখেছে বলেও শুনেছি৷আমি নিজেই নাহিদকে হাসপাতালে পাঠিয়েছি।
এ বিষয়ে পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সারোয়ার জাহান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এ ঘটনায় শুক্রবার রাতেই আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে নাহিদের বড় ভাই দ্বীন ইসলাম বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও দুই জনকে আসামি করে পাকুন্দিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন৷ পুলিশ জানিয়েছেন যে আসামি গ্রেপ্তারে তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
Leave a Reply